ফেইসবুক একাউন্ট নিরাপদ রাখার কার্যকরী নিয়ম

হ্যালো বন্ধুরা কেমন আছেন সবাই,আশাকরি সবাই অনেক ভালো আছেন। বর্তমান সোস্যাল মিডিয়ার জুগে আমরা প্রায় প্রত্যেকেই ফেইসবুক ব্যবহার করি। অনেক সময় দেখা যায় যে,কিছু ত্রুটি ও কারণ বসত আমাদের শখের ফেসবুক আইডিটা বন্ধ হয়ে যায়,এমন পরিস্থিতে দেখা যায় যে আমাদের ফেইসবুক একাউন্টটা পূনরুদ্ধারের কোন পথা যানা থাকেনা। তাই আজকের পোস্টটি একটু মন দিয়ে পড়ুন আশাকরি আজকের পোস্টের মাধ্যমে আপনি আপনার ফেসবুক একাউন্টের নিরাপত্তা বাড়িয়ে তুলতে সক্ষম হবেন। চলুন শুরু করা যাক।

ফেসবুক যে নিরাপদ রাখার উপায়

দিন গেলেই আমরা প্রযুক্তির মাঝে হারিয়ে যাচ্ছি। বিশেষ করে আমাদের জীবনের একাংশ জুড়ে এখন তথ্য প্রযুক্তি।
আর এই তথ্য প্রযুক্তি যেমন আমাদের পথচলাকে সহজ করে দিচ্ছে তেমনই এর রয়েছে ভয়াল দিক। বর্তমান সোস্যাল মিডিয়ার মধ্যে সব থেকে শীর্ষে রয়েছে "ফেইসবুক/Facebook"
ফেইসবুক ব্যবহার করেনা এমন মানুষ বর্তমানে খুব কমই আছে। এক কথায় ইন্টারনেট ব্যবহার কারীদের প্রায় সকলেই এখন ফেইসবুকের সাথে জড়িত। কিন্তু আপনি জেনে অবাক হবেন যে,মুহুর্তেয় দেশ বিদেশের মানুষের সাথে যোগাযোগ করা এই অন্যতম মাধ্যম যেমন সহজ করে দিয়েছে আমাদের যোগাযোগ ব্যাবস্থাকে তেমনই বিপদগ্রস্ত হচ্ছে অনেকই।

ফেসবুক আইডি নিরাপদ রাখার নিয়ম ও উপায়

আজকের টিউটোরিয়ালের মাধ্যমে আপনি জানতে পারবেন কিভাবে একটি ফেসবুক একাউন্টকে হ্যাকারের হাত থেকে সুরক্ষায়/নিরাপদ রাখা যায়।
আজকের টিউটোরিয়াল আপনাকে শিখিয়ে দিবে কিভাবে আপনার ফেসবুক আইডিকে শক্তিশালী হিসাবে চিন্হীত করবেন তাই আসুন এগিয়ে যাওয়া যাক। 


নামঃ
আপনার ফেইসবুক আইডি নিরাপত্তার প্রথম ধাপ হল আইডির নাম। ফেইসবুক আইডিতে ব্যবহার করা নাম যদি আপনার পাসপোর্ট, জাতীয় পরিচয়পত্র বা ড্রাইভিং লাইসেন্সে ব্যবহার করা নামের সাথে মিল না থাকে তাহলে আইডিটা নিরাপদ নয়। কখনোই "এঞ্জেল ফারিয়া", " সেদিন দুজনে", "রকস্টার বয় সিয়াম", "নীল নীলাঞ্জনা" এ ধরনের নাম ব্যবহার করবেন না। নামে স্পেশাল ফন্ট বা স্পেশাল ক্যারেক্টার ব্যারহার করা থেকে বিরত থাকুন। চেষ্টা করুন ন্যাশনাল আইডি কার্ডে ব্যবহার করা নামটিই হুবহু ফেসবুক আইডির নাম হিসেবে ব্যবহার করার জন্য।

পাসওয়ার্ডঃ
আইডি নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে শক্তিশালী পাসওয়ার্ড ব্যবহার করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কখনোই নিজের নাম, জন্মদিন বা ফোন নম্বর হুবহু পাসওয়ার্ড হিসেবে ব্যবহার করবেন না। এতে করে আপনার পাসওয়ার্ড আরেকজন খুব সহজেই অনুমান করে বের করতে পারে। ক্যাপিটাল লেটার, স্মল লেটার, নাম্বার এবং সিম্বল বা চিহ্ন সবগুলোর সংমিশ্রণের মাধ্যমে শক্তিশালী পাসওয়ার্ড ব্যাবহার করুন। যেমনঃ $aH@Yt75%+

মোবাইল নম্বরঃ
অন্যের ন্যাশনাল আইডি কার্ড বা পাসপোর্ট দ্বারা রেজিস্ট্রেশন করা সিম এর নম্বার ফেইসবুকে ব্যবহার করবেন না। কেবলমাত্র আপনার নিজের বা খুবই নিকটাত্মীয়ের নামে রেজিস্ট্রেশন করা সিমের নম্বর ফেইসবুকে ব্যবহার করুন। পাশাপাশি অহেতুক ঝামেলা এড়াতে ফোন নম্বরটি "অনলি মি" করে রাখুন।

ইমেইলঃ
শুধুমাত্র মোবাইল নম্বর দিয়ে ফেইসবুক একাউন্ট চালানো গেলেও আইডির নিরাপত্তার ক্ষেত্রে ইমেইল এড্রেস অ্যাড করা অপরিহার্য। কোনো কারনে আইডি হ্যাকড বা ডিজেবল হলে,ইমেইল অ্যাড্রেস যদি এড করা না থাকে তাহলে পরবর্তীতে আইডি রিকভার করার সম্ভাবনা খুবই কম। ফেসবুক আইডিতে কখনোই অন্যের ইমেইল অ্যাড করবেন না, কেবলমাত্র আপনার নিজের সচল ইমেইল একাউন্ট অ্যাড করুন।

জন্ম তারিখঃ
ফেইসবুক আইডি সুরক্ষার জন্য জন্ম তারিখ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ন একটি বিষয়। আইডি সুরক্ষিত রাখতে চাইলে আপনার ন্যাশনাল আইডি বা পাসপোর্টে প্রদত্ত জন্মদিন ও জন্মসাল এবং ফেইসবুকে প্রদত্ত জন্মদিন ও জন্ম সাল হুবহু একই হতে হবে। কোনো কারনে আপনার ফেইসবুক আইডি হ্যাকড বা ডিজেবল হলে,রিকভার করার জন্য আইডি কার্ড সাবমিট করতে হয়। তখন আইডি কার্ডে দেওয়া জন্মদিন ও জন্ম সাল যদি ফেইসবুকে প্রদত্ত জন্মদিন এবং জন্মসাল থেকে ভিন্ন হয়, আপনি কখনোই আইডিটি রিকভার করতে পারবেন না।

জন্ম তারিখ প্রাইভেট রাখুনঃ
যদি সম্ভব হয় ফেইসবুকে আপনার জন্ম তারিখ প্রাইভেট বা "অনলি মি" রাখুন। দেশে অনেক পেশাগত হ্যাকার রয়েছে যারা কোন ফেসবুক আইডির নাম এবং জন্মতারিখ ব্যাবহার করে ফটো এডিটিং এর মাধ্যমে ভুয়া আইডি কার্ড বানিয়ে তা ফেসবুকে সাবমিট করে আইডি হ্যাক করার চেষ্টা করে। আপনার জন্ম তারিখ যদি হাইড করা থাকে তাহলে ওইসব হ্যাকাররা এই পদ্ধতি ব্যবহার করতে পারবে না, নিরাপদ থাকবে আপনার শখের ফেসবুক আইডিটি। তাই জন্ম তারিখ হাইড রাখুন, যদি জন্মদিন হাইড রাখতে আপত্তি থাকে সেক্ষেত্রে অবশ্যই জন্মসাল হাইড রাখুন।

ফেইসবুক একাউন্ট নিরাপদ রাখার একটি অত্যন্ত কার্যকরী পদ্ধতি হল টু ফ্যাক্টর অথেনটিকেশন সিস্টেম। টু ফ্যাক্টর অথেনটিকেশন হল দুই স্তরের নিরাপত্তাব্যাবস্থা যেখানে সঠিক মেইল/মোবাইল নম্বর এবং পাসওয়ার্ড দেওয়ার পরের ধাপে ব্যাবহারকারীকে পুনরায় ভেরিফাই করা হয়। ফেসবুকে কয়েক ধরনের টু ফ্যাক্টর অথেনটিকেশন সিস্টেম রয়েছে। আপনি যদি টু ফ্যাক্টর অথেনটিকেশন চালু রাখেন সেক্ষেত্রে আইডিতে লগইন করার সময় ফেইসবুক থেকে আপনার মোবাইল নম্বরে একটি কোড পাঠানো হবে। এই কোড সাবমিট করা ছাড়া আপনি ফেইসবুকে লগইন করতে পারবেন না। অর্থাৎ কেউ যদি কোনোভাবে আপনার ফেসবুক একাউন্টের পাসওয়ার্ড জেনেও যায়, এরপরেও সে লগইন করতে পারবে না আপনার মোবাইল নম্বরে পাঠানো কোডটি সাবমিট করা ছাড়া। ফলে আপনার আইডি নিরাপদ থাকবে।

এটি চালু করতে নিচের ধাপগুলো অনুসরণ করুনঃ

Facebook  Settings → Security → Security and login → Two-Factor Authentication → Use Two-Factor Authentication → Text Message.
অব্যশই রিকোভারী কোড গুলো সংরক্ষণ করে রাখবেন।

ট্রাস্টেড কন্টাক্টঃ
ফেসবুক একাউন্টের নিরাপত্তার জন্য আপনার বিশ্বস্ত কয়েকটি আইডিকে ট্রাস্টেড কন্টাক্ট হিসেবে অ্যাড করে রাখতে পারেন। আপনার একাউন্ট হ্যাক হলে বা কোনো কারনে লগইন করতে সমস্যায় পড়লে ট্রাস্টেড কন্টাক্ট ব্যবহার করে একাউন্টটি রিকভার করতে পারবেন।

থার্ড পার্টি অ্যাপ এবং ওয়েবসাইটঃ
ফেইসবুকে অনিরাপদ থার্ড পার্টি অ্যাপ এবং গেম ব্যাবহার করা থেকে বিরত থাকুন। ফেসবুক আইডি ব্যবহার করে থার্ড পার্টি অ্যাপ বা ওয়েবসাইটে লগইন করার সময় সতর্ক থাকুন।
তথ্য সুত্রঃ Facebook Security Centre.

আশাকরি আজকের লেখাটির মাধ্যমে আপনি জানতে পেরেছেন "ফেইসবুক একাউন্ট নিরাপদ রাখার সেরা মাধ্যম গুলো কি কি এবং এই প্রসেস গুলোর কাজ কি।
বিদায় নিচ্ছি আমি শফি,আমাদের ব্লগের সাথে থাকুন।
-ধন্যবাদ।
Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url